চারদিকে উঁচু-নিচু ছোট-বড় পাহাড়। তার গায়ে ঝুলে আছে বাঁশমাচার ঘর। তীব্র সুপেয় পানির সংকট। বিদ্যুৎ তো দূরাশা। অসুখ-বিসুখে কবিরাজি টোটকাই ছিল ভরসা। যাতায়াতের পথ বলতে নদী কিংবা ঝিরি। বাকি পথ মানেই চড়াই-উতরাই। দুর্গম এসব অঞ্চলের বাবা-মা স্বপ্নেও ভাবতো না তার সন্তান লেখাপড়া শিখবে, স্কুলে যাবে।
বিগত দুই দশকের বেশি সময়ে আমূল পরিবর্তন এসেছে পাহাড়ে। সেই অনগ্রসর পাহাড়েও লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। দুর্গম পাহাড়ে এখন জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাতি। নির্মিত হয়েছে প্রশস্ত পাকা সড়ক। সমতল ভূমির পাশাপাশি মাঝারি উচ্চতার পাহাড়ে বেড়েছে চাষাবাদ। পর্যটনকেন্দ্র, উন্নত সড়ক ব্যবস্থা-সব মিলিয়ে বদলে গেছে পাহাড়িদের জনজীবন। এর পেছনে বড় অবদান বাংলাদেশ সেনাবহিনীর। তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এখনো চলছে উন্নয়নযজ্ঞ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এগারোটি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর মধ্যে খুমিদের শিক্ষার হার ও জনসংখ্যা কম। তুলনামূলকভাবে অনগ্রসর এই খুমি সম্প্রদায়ের বসবাস একমাত্র বান্দরবান জেলায়। তবে অন্য নৃগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে উচ্চশিক্ষিতের হার বাড়ছে। দুর্গম পাহাড়ে যেখানে ছিল না স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে বর্তমানে পার্বত্যাঞ্চলে মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই হাজার ৮০০টি।
মূলত শান্তিচুক্তির আলোকে বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার হার যেমন বেড়েছে তেমন বেড়েছে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ। চুক্তির আগে পার্বত্যাঞ্চলে ছিল না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলায় রয়েছে তিনটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ২০১৪ সালে একমাত্র রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে রাঙ্গামাটিতে।