মোঃ রফিকুল ইসলাম খান, পাইকগাছা :
গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপপ্রবাহের ভিতরে সবুজ প্রকৃতির ফাঁকে উঁকি দেওয়া হলুদ আভায় মুগ্ধতা ছড়ানো ফুল সোনালু। সোনালি সৌন্দর্যে মুখরিত এই ফুল পথিকের মনে এনে দিচ্ছে প্রশান্তির ছোঁয়া। পরিবেশ ও প্রকৃতির শোভা বর্ধনে সোনালু দারুণ এক নিসর্গ মায়া এনে দিয়েছে। এই ফুলের দেখা মিলছে পাইকগাছার বিভিন্ন পথে প্রান্তরে।
পাইকগাছায় রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙিনায় , ঝোপ ঝাড়ে গাছে গাছে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় সোনালু ফুল। এ যেন সবুজ গাছ থেকে হলুদ ঝরনা নেমে এসেছে। বাতাসে কিশোরীর কানের দুলের মতো দুলতে থাকা এ ফুল আকৃষ্ট করে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সি মানুষকে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এবং সড়ক-মহাসড়ক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বন জঙ্গলে গ্রামীণ রাস্তার ধারে ছোট বড় সোনালু গাছ দেখতে পাওয়া যায়।
প্রকৃতিকে নয়নাভিরাম রূপে সাজাতে এবং প্রকৃতি পরিবেশের শোভা বর্ধনে সোনালু গাছ সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো হয়ে থাকে। কালের পরিক্রমায় এ গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে প্রায়। খুব কম সংখ্যক গাছ চোখে পড়ে বর্তমানে।
সরেজমিন দেখা যায়, কপিলমুনি থেকে শামুকপোতা অভিমুখি রাস্তার দুই পাশে থোকায়-থোকায় হলুদ আভায় ঝুলে আছে সোনালু। ফুলের মাথা হতে লম্বা লতার মত বড় হয়েছে।
শীতকালে সব পাতা ঝরার পর বসন্তে একেবারেই মৃতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে গাছটি। গ্রীষ্মের শুরুতে দু’একটি কচিপাতার সাথে ফুল ফুটতে শুরু করে। হলুদ সোনালি রঙের অসংখ্য ফুল সারা গাছজুড়ে ঝাড় লণ্ঠনের মতো ঝুলতে দেখা যায়।
জানা যায়, সোনালু গাছের পাতাঝরা মাঝারি আকৃতির । এটি আট থেকে ৯ মিটার উঁচু হয়। হলুদ বরণ এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আছে তার বাহারি নামও। পরিচিত নামগুলো হলো সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠিসহ আরো অনেক। ফুল থেকে ধীরে ধীরে লাঠির মত কালো রঙের ফল হয়ে সেটি কয়েক সেন্টিমিটার অব্ধি লম্বা হয়ে থাকে।
কপিলমুনি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ইকবাল হোসেন খোকন বলেন, সোনালু দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সকলের উচিত এটিকে বাঁচিয়ে রাখা । এই ফুল যতবার দেখি খুব সুন্দর লাগে। মনের মধ্যে এনে দেয় এক প্রশান্তি।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, এটি মূলত সৌন্দর্য বর্ধনে রোপণ করা হয়। গ্রাম বাংলায় এই ফুলকে বাদর লাঠি গাছ বলেও ডাকা হয়। এটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘কেসিয়া ফিসটুলা (Cassia Fastula)। এই উদ্ভিদ বাংলাদেশে অনেক জাতের আছে। ফুলটার জন্য বেশি খ্যাতি রয়েছে বলে অনেক জায়গায় লাগানো হয়। গাছের কাঠগুলো জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয়।