দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একপক্ষীয় ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, এটি দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত। এর ফলে গণতান্ত্রিক অবনমনের অভিজ্ঞতা এবং নির্বাচনী কৌশল ও অভিনবত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেস্ট কেস হিসেবে বিবেচিত হবে। সংস্থাটি বলেছে, নির্বাচনের ৫০টি আসনের ওপর চালানো গবেষণায় টিআইবি দেখতে পেয়েছে, ৫১ শতাংশ কেন্দ্রে বুথ দখল, জালভোট প্রদান ও প্রকাশ্যে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে। সেইসঙ্গে, এসব আসনে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ কেন্দ্রে ভোটারদেরকে জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে এবং ভোট গণনায় জালিয়াতি করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ কেন্দ্রে।
সংস্থাটির কার্যালয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবারের নির্বাচনকে ঘিরে ২০২৩ সালের জুন থেকে মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে টিআইবি। দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫০টি নির্বাচনী আসন বাছাই করে প্রত্যেক আসনে প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ওপর তথ্য সংগ্রহ এবং সরাসরি পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। গবেষণা পরিচালনা করেছেন টিআইবি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মাহ্ফুজুল হক, রিসার্চ ফেলো নেওয়াজুল মওলা ও ডাটা এনালিস্ট সাজেদুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানের কারণে অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন হয়নি। বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে। ক্ষমতায় অব্যাহত থাকার কৌশল বাস্তবায়নের একতরফা নির্বাচন সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে, যার আইনগত বৈধতা নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ হয়তো হবে না, বা হলেও টিকবে না।