শনিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৪

কুমার নদে ১২৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচে মানুষের ঢল

ফরিদপুর প্রতিনিধি : 

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার তেলজুড়ী এলাকায় কুমার নদে ১২৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বছরের এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকে ওই এলাকাসহ আশপাশের কয়েক উপজেলার নানা শ্রেনীপেশার মানুষ। নৌকা বাইচ দেখতে নদের দুই পাড়ে অর্ধলক্ষাধিক নারী-পুরুষের ঢল নামে। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নৌকা বাইচের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আরডিডি গ্রুপের কর্নধার আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদার। ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বাইচে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোটবড় ১০টি নৌকা অংশ নেয়।

জেলার বোয়ালমারী উপজেলার তেলজুড়ি বাজার সংলগ্ন এলাকায় কুমার নদের দুই পাড়ে অর্ধলক্ষাধিক নারী-পুরুষ বিভিন্ন সাজে দাড়িয়ে নৌকা বাইচ উপভোগ করছেন। অনেকেই নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করে এই উৎসব দেখছেন। নৌকা বাইচ উপলক্ষে মেলায় মিষ্টির দোকান, ইলিশের দোকান, খেলনা ও বিভিন্ন খাবার দোকানের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অঞ্চলের মেয়েদের জামাইরা বউ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন আনন্দে।

নৌকা বাইচ দেখতে আসা তেলজুড়ি গ্রামের ও পাংশা উপজেলার গৃহবধূ শাহিদা বেগম বলেন, প্রতি বছরের এইদিনে কুমার নদে নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলা স্বামীর বাড়ি থেকে ছুটে আসি। মেয়েরা জামাই নিয়ে বাবার বাডিতে আসেন। প্রতিবারের মতো স্বামী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। মেলা থেকে অনেক কিছু কেনাকাটা করেছি।

মেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থী নুর নাহার জানান, বান্ধবীদের নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। মেলায় ঘুরে উপভোগ করছি। খুব আনন্দ লাগছে।

মিষ্টি ব্যবসায়ী জব্বার মোল্লা বলেন, পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে এই নৌকা বাইচের মেলায় মিষ্টি বিক্রি করতে আসি। এবারও মেলায় দোকান দিয়েছি। দোকানে রসগোল্লা, আমৃত্তি, দানাদার, জিলাপিসহ বিভিন্ন মিষ্টি সামগ্রী রয়েছে। আবহাওয়া খারাপ হলেও বেচাকেনাও বেশ ভালো হচ্ছে।

নৌকা বাইচে মেলা কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, আরডিড গ্রুপের এমডি আজিজুল আকিল ডেভিড সিকদার। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, সাবেক ছাত্রদলনেতা সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ নিউটন মিয়া। এ সময় বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল, ওসি (তদন্ত) মজিবুর রহমান ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন । 

বাইচ শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিজয়ী ৩টি নৌকার মালিকদের ফ্রিজ এবং এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার তুলে দেন উপস্থিত অতিথিরা। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সকল নৌকাকে শান্তনা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। 

মেলায় আসা বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল জানান, নৌকা বাইচ ও মেলা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বোয়ালমারী থানা পুলিশের সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
আরও
- Advertisement -spot_img