মঙ্গলবার, অক্টোবর ৮, ২০২৪

কুড়িগ্রামে মৎস্য চাষীদের গুড একুয়াকালচার প্রাকটিস  এন্ড সেফটি ফুড বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

আর্থিক সংকটে কুড়িগ্রাম মৎস্য বিভাগ। মৎস্য চাষীদের জন্য নেই কোন প্রণোদনা, প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কৃষকদের জন্যেও নেই যাতায়াত ভাতা কিংবা সম্মানী ভাতা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রামে মৎস্য চাষীদের নিয়ে গুড একুয়াকালচার প্রাকটিস এন্ড সেফটি ফুড বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বুধবার (৫ জুন) সকালে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তরের  সম্মেলন কক্ষে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তর, কুড়িগ্রাম সদরের আয়োজনে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের রাজস্ব খাতের আওতায় দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মুক্তাদির খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে মৎস্য অধিদপ্তর রংপুর বিভাগের উপপরিচাক মোঃ সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া প্রধান অতিথি এবং সিনিয়র সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইসমত আরা ও সিনিয়র নাগেশ্বরী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহাদৎ হোসেন প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির স্বাগত বক্তব্যে বিভাগীয় উপ-পরিচালক বাংলার ঐতিহ্য মাছে ভাতে বাঙালী স্মরণ করে বলেন, মাছ চাষ খুবই সম্মানজনক একটি পেশা। মাছ চাষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থিক সচ্ছলতাসহ প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে। তিনি জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি নিরাপদ ও গুণগত মানসম্পন্ন মাছ উৎপাদনের ব্যাপারে অধিক যত্নশীল থেকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরও বলেন, নিরাপদ এবং গুণগত মানসম্পন্ন মাছ উৎপাদনে মৎস্য চাষীদের করণীয় সম্পর্কে চাষীরা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। তবে প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল হওয়ায় মৎস্য বিভাগ প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কৃষকদের যাতায়াত ভাতা, সম্মানী ভাতা কিংবা প্রণোদনা দিতে পারছে না। এতে কৃষকরা নিরাপদ ও গুণগত মানসম্পন্ন মাছ উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছে।  মৎস্য বিভাগ আর্থিক সংকটে ভুগছে বলেও জানান তিনি। তবে অদূর ভবিষ্যতে আর্থিক  সংকট মোকাবেলায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন তিনি।

প্রশিক্ষণের আলোচনায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মুক্তাদির খান বলেন, জেলায় যে সংখ্যক মৎস্য চাষীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার মৎস্য বিভাগ বরাদ্দের অপ্রতুলতার কারণে তা পারছে না। প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে আমরা লিফলেট বিতরণ করছি। আমাদের ম্যাসেজ সকল কৃষকের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কৃষকরা যাতে মৎস্য উৎপাদনে ক্ষতিকর উপকরণ যেমনঃ গরুর গোবর, হাস-মুরগীর বিষ্টা কিংবা সেফটি ট্যাংকের সুরায়্যেজ লাইন পুকুরে বা খামারে ব্যবহার না করেন প্রশিক্ষণে সে পরামর্শ দেওয়া হয়। 

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইসমত আরা ও মোঃ শাহাদৎ হোসেন প্রশিক্ষণে পুকুর প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে মাছ আহরণ এবং বাজারজাতকরণ পর্যন্ত মৎস্য চাষীদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করেন।

দূরদূরান্ত থেকে এসে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েও যাতায়াত ভাতা ও সম্মানী ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কাঁঠালবাড়ী এলাকার মৎস্য চাষী আব্দুর রশিদ আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, দূরদূরান্ত থেকে এসে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হয়। অথচ যাতায়াত ভাতা, সম্মানী ভাতার কোন ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া মৎস্য চাষীরা মাছের খাদ্য কিংবা মাছ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণও সরকারি  প্রণোদনা পান না। এটা দুঃখজনক। তিনি সরকারি প্রণোদনার দাবী জানান।

মোগলবাসা ইউনিয়নের মৎস্য চাষী শাহালম মিয়া বলেন, মাছের খাবারসহ মাছ চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণের দামের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি নিরাপদ ও গুণগত মানসম্পন্ন মাছ উৎপাদনের প্রধান অন্তরায়। 

প্রাপ্তিরও কোন ব্যবস্থা না থাকায় মাছ উৎপাদনে কৃষকদের প্রতিনিয়ত হিমসিম খেতে হচ্ছে। অনেক সময় লাভের বদলে লোকসান গুণতে হচ্ছে। স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে মৎস্য চাষীদের ঋণ প্রাপ্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন হতে আগত ২০ জন মৎস্য চাষী ও খামারি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
আরও
- Advertisement -spot_img