রাজু আহাম্মেদ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
‘খাদ্য, পুষ্টি ও অর্থ চান বেশি করে আলু লাগান’। তাই কৃষক ও ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারগুলোতে ভিড় জমান।
কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। হিমাগার কর্তৃপক্ষ চাষী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আলু সংরক্ষণে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না। যদিও জমি থেকে আলু উত্তোলন প্রায় শেষের পথে। হিমাগারগুলো ৭০% আলু সংরক্ষণ করতে পেরেছে। বাকী ৩০ % এখনো খালি জায়গা রয়েছে।
হিমাগারগুলোতে আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট একটি সময় তাদের আলু সংরক্ষণ করে তা উত্তোলনের পর বাজারজাত করে থাকেন। কুড়িগ্রামে হিমাগারগুলো এবার কাঙ্ক্ষিত আলু না পেয়ে বাজারে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে এই সুযোগে একটি সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ইচ্ছামত আলুর দাম বাড়িয়ে দিবে।
কৃষকরা বলছেন, হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি ও বস্তা প্রতি ৫০ কেজির বেশি আলু না রাখায় অনেকে স্থানীয়ভাবে আলু সংরক্ষণ করছেন।
কুড়িগ্রাম জেলার চারটি হিমাগারে ঘুরে দেখা যায়, এ. হক হিমাগার ১৩ হাজার মেট্রিক টন এর মধ্যে ৮ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করতে পেরেছেন। তাদের ৪টি চেম্বারের মধ্যে ৩টি পূরণ হয়েছে। মোস্তফা কোল্ড স্টোরেজ তাদের ৩ টি চেম্বারের মধ্যে ২টি চেম্বার পূর্ণ হয়েছে। সিকেন্দার বীজ হিমাগারে ৩টি চেম্বারের মধ্যে অর্ধেক চেম্বার পূরণ হয়েছে।
বাবর কোল্ড স্টোরেজ (প্রাঃ) লিমিটেড এর ম্যানেজার শরিফ আল মাসুদ মন্ডল বলেন, গতবার আলুর আবাদ কম হয়েছে। তাই এবার বীজের দাম বেশি ছিল। শীত, খরা এবং ছত্রাকনাশক রোগ হওয়ায় এবারও আলুর আবাদ একটু কম। তাছাড়া সরকার নির্ধারিত বস্তা প্রতি ৫০ কেজির বেশি আলু না রাখায় ধারণক্ষমতা অনুযায়ী আমরা আলু পাচ্ছি না।’
রায়পুর বাজারের আলু চাষী ও ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ কাজল বলেন, ‘এ মৌসুমে জমিতেই কেজি প্রতি আলু ২৮-৩০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় কৃষক খুশি। এবার হিমাগারে আলু রাখার পর সরকার যদি দাম বেঁধে দেয় তাহলে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি কুড়িগ্রামের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তা অর্জিত হয়েছে ৭ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে।