এম জি রাব্বুল ইসলাম পাপ্পু, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিবছর ঢাকায় একটি বড় আকারের ইফতার পার্টির আয়োজন করে থাকে। এবছর সেই ইফতার আয়োজন বাতিল করে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় দেশের বিভিন্ন জেলার অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন।
সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পুলিশের আয়োজনে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের সহায়তায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া দুঃস্থ ও অসহায় ১৫০ জন সম্মানিত নাগরিকের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
উন্নত মানের প্রকৃতিবান্ধব পাটের ব্যাগে পরিবেশিত প্রতিটি ইফতার প্যাকেজে ছিল ৫ কেজি উন্নত মানের বাসমতি চাল, দেড় কেজি ছোলা, ২ লিটার তীর সয়াবিন তেল, ১ কেজি সুগার মিলের চিনি, ১ কেজি উন্নত মানের মসুর ডাল, ১টি গুড়া দুধের প্যাকেট ও ১ প্যাকেট সেমাই।
ইফতার সামগ্রী গ্রহীতার মধ্যে রাজিবপুর থেকে ১৫ জন, রৌমারী থেকে ১৫ জন, ঢুষমারা থেকে ১৫ জন, চিলমারী থেকে ১০ জন, নামাজের চর থেকে ১০ জন, মোহনগঞ্জ থেকে ১০ জন, উলিপুর থেকে ১০ জন, কুড়িগ্রাম সদরের ১০ জন, ভূরুঙ্গামারীর ১০ জন, কচাকাটার ১০ জন, নাগেশ্বরীর ১০ জন, ফুলবাড়ীর ১০ জন ও রাজারহাট থেকে ১০ জনকে কুড়িগ্রাম সদর এবং চিলমারী এলাকায় গিয়ে আইজিপি মহোদয়ের পক্ষে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশের ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন।
চিলমারী শাখাহাতির চর এলাকার কপজান বেওয়া ইফতার সামগ্রী পেয়ে বলেন, “কয়দিন থাকি ছাওয়া গুলাক নিয়া চাউল ভাজিয়া ইফতার করচোং পুলিশ হামাক বুট, সেমাই, দুধ দিছে আইজকা ছাওয়াগুলা ভালমন্দ খাবার পাইবে। আল্লাহ পুলিশের ভাল করুক।”
কুড়িগ্রাম সদরের শুলকুর বাজারের রহিমা বেগম ইফতার সামগ্রী পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “মোর বয়স হইছে কাম করবার পাও না পুলিশের চাউল তেল পায়া মোর খুব উপকার হইল।”
কচাকাটার কবিরাজপাড়ার মেজভান ইফতার সামগ্রী পেয়ে বলেন, “এই রোজাত মুই কারোর কাছে কোন সাহায্য পাং নাই আইজ পুলিশ মোক চাউল ডাইল তেল দুধ সেমাই দিল ছাওয়া পাওয়া গুলা কয়দিন ভাল খাবার পাইবে।”
ভূরুঙ্গামারীর দেওয়ানের খামারের ওমর আলী শেখ ইফতার সামগ্রী পেয়ে বলেন, “আমরা গরিব মানুষ ঠিক মতো খাবার পাইনা রোজার দিনে কামকাজ নাই। বাজার করবার পাইনা, পুলিশ আইজকা মেলাকিছু দিছে। আমারা খুব খুশি।”
ভূরুঙ্গামারীর ফুল কুমারের প্রতিবন্ধী মজিরণ ইফতার সামগ্রী পেয়ে বলেন, “মুই ভিক্কা খাচিনু মোক এর আগে পুলিশ একটা দোকান করি দিছে মোক দেখার কায়ো নাই, পুলিশ আজকা মোক সাহায্য করছে আল্লাহ ওমার ভাল করুক।”
রৌমারীর সালাম ইফতার সামগ্রী পেয়ে বলেন, “হামরা চরের মানুষ কোন কিছু কিনবার গেলা মেলাদুর যাওয়া নাগে কামকাজ নাই, বাসাত ছইলগুলাক ভালো কিছু খাওয়াবার পাইনা। আইজকা পুলিশ খাবার দিলো খুব উপকার হইছে।”
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিবছর ঢাকায় একটি বড় আকারের ইফতার পার্টির আয়োজন করে থাকে। এবছর সেই ইফতার আয়োজন বাতিল করে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম স্যার দেশের বিভিন্ন জেলার অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন। সে ধারাবাহিকতায় আজ আমরা কুড়িগ্রামের বিভিন্ন থানার কিছুটা পিছিয়ে পরা প্রায় ১৫০ জন সম্মানিত নাগরিকদের বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছি।”