মঙ্গলবার, অক্টোবর ৮, ২০২৪

বনজুঁই সৌন্দর্যে মাতাল প্রকৃতি 

অ আ আবীর আকাশ :

ঋতুবৈচিত্র্যের দোলাচালে শীত ঋতুকে বিদায় জানিয়ে  বসন্ত এসেছে। বনে বনে, গাছে গাছে ফুল, ঝোপেঝাড়ে ফুল, পথের দু’পাশে ফুল, জংলায় ফুল এমনকি ঘাসেও ফুল। আম গাছে আমের মুকুল, চারদিকে পাখির কলরব। একদিকে ঝরা পাতার মর্মর শব্দ অন্যদিকে কচি পাতার উঁকি তা স্পষ্টরূপে জানান দিচ্ছে বসন্তের। বনে বনে তৃণতরুতে বসন্ত এসেছে। বসন্তে তৃণতরুতে যৌবন আগমনের সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্য্য মেলে ধরেছে অবহেলিত বনজুঁইও। যাকে চিরচেনা গ্রাম বাংলায় ভাঁটফুল নামে চিনে। আর বসন্ত এলেই পথে প্রান্তরে, পথের ধারে অযত্নে অবহেলায় নিজের সর্বস্ব দিয়ে সৌন্দর্যের জানান দেয় থোকায় থোকায় ফুল ফোটে। এ ফুলেরও আলাদা রঙ রূপ সৌন্দর্য রয়েছে। শুধু তাই নয় রয়েছে কড়া মিষ্টি ঘ্রাণ।

মেঘনার উপকূলীয় অঞ্চল লক্ষ্মীপুরে সর্বত্র এ রাস্তা কিবা মেঠো পথের দু’পাশে সেজে থাকা বনজু্ঁই বা ভাঁটফুলের সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায়। তারা প্রেমিক প্রেমিকার হৃদয় কাড়া না হতে পারলেও পথে প্রান্তরে আপন সৌন্দর্য্য মেলে ধরেছে সবুজ বহুপত্রী এই ফুল। জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে ফোটেছে নজরকাড়া এই ফুল। দখিনা মৃদু হাওয়ায় কি অপরূপ ভঙ্গিতে দোল খায় ভাঁটফুল। 

গ্রামাঞ্চলে মাঠে-ঘাটে, পথে প্রান্তরে প্রায়শই দেখা যায় নাম না জানা নানা প্রজাতির বনফুল। অনেক কবি প্রেমে পড়েছিলেন নানা প্রজাতির বনফুলের। যার মধ্যে ফুলপ্রেমীদের মনে সাড়া জাগানিয়া অন্যতম একটি ফুল হলো বনজুঁই।

নামটি শুনলে অনেকের কাছেই অপরিচিত মনে হবে। অযত্ন অবহেলায় বেড়ে ওঠা এই বনফুলটি ভাঁটফুল, ভাঁটিফুল, ঘেঁটুফুল বা ঘণ্টাকর্ণ নামেই অধিক পরিচিত। বনজুঁইয়ের বৈজ্ঞানিক নাম ক্লেরোডেন-ড্রাম-ইনারমি। ইনফরচুনাটাম প্রজাতির ফুল এটি। প্রায় ৪০০ প্রজাতির বনজুঁই পাওয়া যায়। যাদের আদি নিবাস এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়।

এই ফুলের মন মাতানো সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ।  মিষ্টি গন্ধ মাতাল করে তোলে ফুলপ্রেমীদের মন। বনজুঁই সৌন্দর্য্য বর্ধন ছাড়াও নানা গুণে গুণান্বিত। ভেষজ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই উদ্ভিদটির পাতা, শিকড় ও ফুল। ম্যালেরিয়া, চর্মরোগ ও পোকা-মাকড়ের কামড়ে খুবই উপকারী। এই উদ্ভিদের কচি পাতার রস টনিক হিসেবে কাজ করে। পাতায় প্রাপ্ত কেমিক্যাল কৃমিনাশক, জ্বর উপশমকারী ও এক্সপেকটোরেন্ট হিসেবেও কাজ করে। মূল থেকে প্রাপ্ত কেমিকেল এজমা, টিউমার ও চর্মরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ইমপোটেন্সি বা যৌনদুর্বলতায় মূলের উষ্ণ রস চমকপ্রদ ফলপ্রসূ।

——

অ আ আবীর আকাশ 

সাহিত্যিক ও সাংবাদিক 

লোকসাহিত্য গবেষক 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
আরও
- Advertisement -spot_img